বেলা সাড়ে ১১টা। করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বেঞ্চে বসে আছেন এক বৃদ্ধ।
সঙ্গে ১১–১২ বছরের এক কিশোর। সামনে যেতে উঠে দাঁড়িয়ে কিশোরটি বলল, তার বাবা করোনায় আক্রান্ত। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। জ্বর আছে। গলায় ব্যথা। ভর্তি করতে নিয়ে এসেছেন।
আলাপে জানা গেল কিশোরটির নাম তাইজুল ইসলাম। বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায় আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সোনাতনকাটি গ্রামে। তার বাবা আফসার মোড়ল (৬০) বেশ কয়েক দিন ধরে জ্বর, সর্দি–কাশিতে ভুগছিলেন। বুধবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ৫৫ কিলোমিটার দূরত্ব তাঁরা কখনো ভ্যানে, কখনো ইজিবাইক, আবার কখনো মাহিন্দ্রায় চেপে পাড়ি দিয়েছেন। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে বেলা ১১টা বেজে যায়। জরুরি বিভাগের সামনে বারবার কান্নার সুরে তাইজুল বলছিল, ‘আমাদের মা–বাবা ছাড়া কেউ নেই। আল্লাহ আবার বাবাকে সুস্থ করে দেও।’
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে বেলা আড়াইটার দ্বিতীয় তলায় আবার দেখা তাইজুলদের সঙ্গে। ওয়ার্ডের বাইরে একটি ভাঙা শয্যায় বাবাকে জড়িয়ে ধরে বসে আসে। ভর্তি হয়েছ কি না, জিজ্ঞাসা করতে করুণ স্বরে তাইজুল বলে, ‘আধা ঘণ্টা ধরে ভর্তির জন্য বসেছিলাম, আপনি যে আমাগে সঙ্গে কথা বললেন, তারপর ডেকে নিয়ে ভর্তি করে। জিজ্ঞাসা করেছে “ওই লোকটার সাথে কী বলেছিস।”’